You are currently viewing মোবাইলে আসক্তি কি, কিভাবে মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে থাকা যায়!
মোবাইলে আসক্তি

মোবাইলে আসক্তি কি, কিভাবে মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে থাকা যায়!

মোবাইলে আসক্তি কি, কিভাবে মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে থাকা যায়!

মোবাইল আসক্তি কে কিছু গবেষক মোবাইলের ওপর মনস্তাত্তিক বা আচরণগত নির্ভরতার রূপ হিসেবে প্রস্তাব করেছেন ! মোবাইল আসক্তির কয়েকটি উদাহরণ হল মোবাইলের প্রতি বেশী ব্যস্ততা দেখানো, মোবাইলের প্রতি অধিক সময় ব্যয় করা, এবং অটোমোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনুপযুক্ত পরিবেশে মোবাইল ব্যবহার করা। ২০১৯ সালে পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা গেছে ৪১ শতাংশ মানুষ মোবাইল ব্যবহার করে। অত্যাধিক প্রযুক্তির বিকাশের কারণে চীনের মত দেশ একটি হুমকির পথে দাঁড়িয়েছে। ২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী মোট মোবাইল ব্যবহারকারী সংখ্যা হচ্ছে প্রায় 700 লক্ষ্য। দিন দিন বেড়ে চলেছে মোবাইলে ব্যবহার। রাতে আসক্ত হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মানুষ বিশেষ করে তরুণ-তরুণী এবং শিশু-কিশোরেরা। মোবাইলে আসক্তি কি কিভাবে মোবাইল আসক্ত থেকে দূরে থাকা যায় আজকের পোস্টটা সব বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। মোবাইলে আসক্তির মধ্যে যা সত্যি গুলো পড়ে সেগুলো হচ্ছে অযথা ফেসবুক ব্যবহার ঠিকটক ইউটিউব ব্যবহার ইত্যাদি ইত্যাদি। এ মোবাইল আসক্তির কারণে শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন মাইয়োপিয়া আক্রান্ত হচ্ছে অনেক মানুষ। তাই অবশ্যই সচেতন হয়ে সময় অনুযায়ী মোবাইল ব্যবহার করা প্রয়োজন। যে বিষয়গুলো সম্পর্কে আজকে আলোচনা করা হবে সেগুলো হল!

 

  1. মোবাইল আসক্তি কি?
  2. মোবাইল আসক্তি লক্ষণ গুলো কি কি?
  3. মোবাইল আসক্তির কারণ গুলো কি কি?
  4. মোবাইল আসক্তির কুফল !
  5. মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়!
  6. শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়!
  7. মোবাইল ঘুমের ভূমিকা?
  8. মোবাইল আসক্তির কারণে যে রোগ গুলো হয়!

 

মোবাইল আসক্তি মূলত হচ্ছে মোবাইলের উপর অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার। যখন প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পরিমাণ ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি তখন সেটাকে মোবাইল আসক্তি বলে। বর্তমান সমাজে প্রায় অধিকাংশ মানুষই মোবাইল আসক্তিতে লিপ্ত। অনেকে জানিনা কিভাবে মোবাইল আসক্তি থেকে বের হতে হবে। মোবাইল আসক্তির কারণে নষ্ট হচ্ছে অধিক পরিমাণের সময়  এবং টাকা । কিভাবে মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে থাকা যায় এটা প্রায় সবাই জানতে চাই। এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

 

  1. মোবাইল আসক্তি কি?

 

আজকের এই আধুনিক সময়ে মোবাইল ফোন আমাদের অনেক উপকারে আসছে। প্রায় প্রতিটা মুহূর্তে মোবাইল ফোন আমাদের বিভিন্ন ধরনের কাজের সুবিধা আনছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আসছে অনেক টাকা। তবুও অতিরিক্ত পরিমাণ মোবাইলের ব্যবহারের কারণে আমাদের ব্যবহার হচ্ছে নষ্ট হচ্ছে অনেক সময়। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহারই হল মোবাইলে আসক্তি। মোবাইলে আসক্তি মূলত 12 থেকে ৩৫ বছরের মানুষেরা বেশি হয়। এই মোবাইলে আসক্তির কারণে পারিবারিক সমস্যা মাথায় চাপ ডিপ্রেশন লেগে আছে মানুষের মধ্যে। আজকাল মোবাইল ফোন বলতে যেগুলোকে বলা হচ্ছে সেগুলো হতে পারে স্মার্ট ফোন ট্যাবলেট অথবা পার্সোনাল কম্পিউটার। গোটা পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ রাখার জন্য এ সকল মাধ্যমগুলো আমরা ব্যবহার করছি তবুও প্রয়োজনের তুলনায় যখন এগুলো অতিরিক্ত পরিমাণ ব্যবহার করছি সেটা আসক্তিতে পরিণত হচ্ছে। আপনি যখন স্মার্ট ফোন ব্যবহারের জন্য নিজেকে আটকাতে পারছেন না তখন বুঝতে হবে আপনি মোবাইলে আসক্ত হয়েছেন। অবশ্যই একটি খারাপ অভ্যাস এটি। এ অভ্যাস থেকে আমাদের বেরোতে হবে অবশ্যই।

 

  1. মোবাইল আসক্তির লক্ষণ কি কি?

 

মোবাইল আসক্তির লক্ষণ গুলো আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন। মোবাইল আসক্তির লক্ষণ গুলোর মধ্যে যে লক্ষণ সর্বপ্রথম দেখা যায় সেটা হচ্ছে অপ্রয়োজনে অতিরিক্ত পরিমাণ মোবাইল ব্যবহার, প্রয়োজনের তুলনায় যখন আপনি অতিরিক্ত পরিমাণ মোবাইল ব্যবহার করবেন তখন আপনাকে বুঝতে হবে যে আপনি মোবাইলে আসক্ত হয়েছেন। প্রয়োজনের তুলনায় কোন কিছুই আমাদের বেশি ভালো না। মোবাইলে প্রয়োজনের তুলনাই যখন অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করবেন ঠিক এটি আপনার মাদক দ্রব্যের মতো আসক্তিতে পরিণত হবে। মোবাইল আসক্তির আরেকটি মূল উদাহরণ হলো স্মার্টফোনের বিভিন্ন নোটিফিকেশনের জন্য  বারবার মোবাইল ফোন চেক করা । মোবাইল আসক্তির আরো একটি লক্ষণের মধ্যে উপরোক্ত লক্ষণটি প্রায় সবার মাঝে দেখা যায়। মোবাইল আসক্তির অন্যতম আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে ব্যাটারীতে চার্জ না থাকলে ছটফট করা। মোবাইল আসক্তির লক্ষণ গুলোর এই কয়েকটি লক্ষণ সব থেকে বেশি দেখা যায়। যদি এই কয়েকটি লক্ষ্য না আপনাদের মাঝে থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনারা মোবাইলে আসক্ত। মোবাইল আসক্তির কারণে নষ্ট হচ্ছে অনেক সময়। মোবাইল আসক্তি অন্য লক্ষন গুলোর মধ্যে রয়েছে অকারনে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন ধরনের ভিডিওগুলো দেখা টিক টক ইউটিউব দেখা।

 

  1. মোবাইল আসক্তির কারণ গুলো কি কি?

 

মোবাইল আসক্তির মূল কারণের মধ্যে রয়েছে অযথা বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা। সোশ্যাল মিডিয়া বলতে সাধারণত ফেসবুক মেসেঞ্জার ইউটিউব tiktok ইত্যাদি কে বোঝায়। ফেসবুক মেসেঞ্জার ইউটিউব tiktok এগুলো সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে কিন্তু যখন আমরা এগুলো প্রয়োজন থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করব তখন সেটাকে মোবাইলের আসক্তি বলে। ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট নিউজফিড ঘুরতে ঘুরতে আমাদের প্রায় অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। বিভিন্ন ধরনের ভিডিও দেখতে দেখতে আমাদের অনেক সময় ব্যয় হয়। আর প্রয়োজনের তুলনায় যখন আমরা এগুলো অধিক পরিমাণে ব্যবহার করি তখন এটাকে মোবাইল আসক্তি বলে। মোবাইল আসক্তির কারণগুলোর মধ্যে আরেকটি হলো পর্নোগ্রাফি ভিডিও দেখা। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের পর্নোগ্রাফি ভিডিও দেখার জন্য মানুষ মোবাইল ফোন ইউজ করতে থাকে এবং ওয়েবসাইট গুলোতে নতুন নতুন ভিডিওর আশায় স্ক্রল করতে থাকে এবং অপ্রয়োজনে বিভিন্ন সময় নষ্ট করে থাকে। মোবাইল আসক্তির অন্য কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন সাইটগুলোতে নতুন ভিডিওর জন্য স্ক্রল করতে থাকা। বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা বিভিন্ন ধরনের যখন নতুন ভিডিও পাবলিশ করে তখন সেই ভিডিওর জন্য স্ক্রল করতে থাকায় হচ্ছে মোবাইল আসক্তির অন্যতম একটি কারণ। বিভিন্ন নোটিফিকেশন এর জন্য বারবার মোবাইল ফোন চেক করা হচ্ছে মোবাইল আসক্তি আরো একটি বড় লক্ষণ। অধিক পরিমাণে মেসেঞ্জার ব্যবহার করা হচ্ছে মোবাইল আসক্তির অন্যতম আরো একটি লক্ষণ। অধিক পরিমাণ messenger ব্যবহার করলে বা মেসেঞ্জারে টেক্সটিং করতে করতে আপনার অনেক সময় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এটা আপনি বুঝতে পারছেন না। উপরোক্ত এই কয়েকটি কারণই হচ্ছে মোবাইল আসক্তির কারণ।

 

  1. মোবাইল আসক্তির কুফল !

 

মোবাইল আসক্তির অন্যতম সর্বপ্রথম কুফল হচ্ছে সময়ের অপব্যবহার। আপনি যদি মোবাইলের প্রতি অধিক পরিমাণে অ্যাডিক্টেড হয়ে যান তাহলে আপনার সময় এর পরিপ্রাপ্ত ব্যবহার করতে পারবেন না। সময়ের মূল্য দিতে পারবেন না। মোবাইল আসক্তির কারণে বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদের প্রচুর পরিমাণে লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে । সারাদিন সোশ্যাল মিডিয়াতে স্ক্রল করতে করতে সময় নষ্ট হচ্ছে বোঝর ক্ষমতা হচ্ছে না যে লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে। মোবাইল আসক্তির কারণে শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয় বিশেষ করে চোখের ক্ষতি । চোখের ক্ষতি ছাড়া মাইয়োপিয়া নামের অন্য একটি রোগও হয়ে থাকে। দিনদিন মাইয়াওপিয়ার সংখ্যা বেড়ে চলেছে শুধুমাত্র মোবাইল ফোনের অপব্যবহারের কারণে। অতিরিক্ত পরিমাণ মোবাইল আসক্তির কারণে দিন দিন বেড়ে চলেছে অন্ধের সংখ্যা। অতিরিক্ত পরিমাণ মোবাইল এর ব্যবহারের কারণে পড়ে থাকতে পারিবারিক বিভিন্ন ধরনের কাজ সমাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ লেখাপড়া খেলাধুলা সবকিছু থেকে দূরে চলে আসছে মানুষ। তাই মোবাইলকে অতিরিক্ত পরিমাণ ব্যবহার না করে সময় অনুযায়ী ব্যবহার করা প্রয়োজন।

 

  1. মোবাইলে আসক্তি কমানোর উপায়?

 

মোবাইলে আসক্তি কমানোর কার্যকরী সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় সেটি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে ঘুমানো। আপনি যখন প্রচুর পরিমাণে ঘুমাবেন তখন মোবাইলের আসক্তি থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন। মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম আরো একটি উপায় হচ্ছে নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখা। বন্ধু বান্ধবের সাথে আড্ডা দেওয়া, পরিবার সমাজ সবাইকে সময় দেওয়া, আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে মোবাইলে আসক্তিতে ভুগেন তাহলে আপনি হঠাৎ করে দু-একদিনের মধ্যে আপনি এটা ছাড়তে পারবেন না। মোবাইল আসক্তি ছাড়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই রুটিন মানতে হবে। যেমন ধরেন আপনি প্রতিদিন ছয় ঘন্টা করে মোবাইল ব্যবহার করতেন প্রথম সাত দিনে আপনাকে দুই ঘন্টা মোবাইল ব্যবহার কমাতে হবে তারপরে ধীরে ধীরে এভাবে মোবাইলের আসক্তি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া মোবাইলে মেসেজ নোটিফিকেশন চেক করা দূর করতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া অযথা টেক্সট করে সময় নষ্ট করা যাবে না। প্রতিদিন নিয়ম করে খেলাধুলা করা হচ্ছে মোবাইল থেকে দূরে থাকার অন্য একটি উপায়।

 

  1. শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়!

 

শিশুদের মোবাইল আসক্তি বলতে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের গেমসকে বোঝাই। প্রায় প্রতিটি পিতা মাতারই দায়িত্ব শিশুদের মোবাইল থেকে দূরে রাখা। মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের গেমস আনইন্সটল করে দেওয়া। অনেক শিশু আছে যারা বিভিন্ন ধরনের গেমস ছাড়া লেখাপড়া করতে চায়না খাবার দাবার খাইতে চায় না তাদের জন্য নিয়ম মেনে মোবাইল ব্যবহার করতে দেওয়া। শিশুকে পরিবারের মধ্যে রাখা। অধিক পরিমাণের ছেলেমেয়েদের যত্ন নেওয়া হচ্ছে মোবাইল আসক্ত থেকে দূরে রাখার অন্য একটি উপায়। অপ্রয়োজনীয় মোবাইলে এমবি অথবা ডাটা কানেকশন না রাখলে শিশুরা মোবাইল থেকে আসক্ত হতে পারবে না।

 

  1. মোবাইল আসক্তি তে ঘুমের ভূমিকা

 

মোবাইল আসক্তিতে ঘুমের ভূমিকা অপরিসীম। আপনি যদি অধিক পরিমাণে মোবাইলে আসক্তি হয়ে যান তাহলে ঘুমের অভ্যাস করুন আপনি মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে থাকতে পারবেন। আপনার কোন কাজ নেই ! আপনি ঘুমান তাহলে মোবাইল ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন না আপনি মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে থাকতে পারবেন। মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে থাকার মধ্যে রয়েছে মোবাইলে ব্যাড টাইম মোড অন করে রাখা ফোকাস মুড অন করে রাখা নোটিফিকেশন অফ করে রাখা। এই কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলে এবং ঘুমের অভ্যাস করলে আপনি মোটামুটি ভাবে মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে থাকতে পারবেন।

 

  1. মোবাইল আসক্তিতে রোগগুলো!

 

মোবাইল আসল কিছু চোখের বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে থাকে বিশেষ করে মায়োপিয়া নামের রোগ হয়ে থাকে । পরিসংখ্যান থেকে দেখা গেছে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে ডিজিটাল মিডিয়াগুলো তে মানুষ আসক্ত হবে এবং ফলস্বরূপ প্রায় বিশ্ব জনসংখ্যার ৪৯.৮ ভাগ মাইয়োপিয়া নামের রোগে আক্রান্ত হবে।

 

মোবাইল আসক্তি কি মোবাইল আসক্তি থেকে কিভাবে দূরে থাকা যায় উপরোক্ত বিষয় সম্পর্কে আজকের পোস্টে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে যদি এমন আরো বিভিন্ন ধরনের পোস্ট পেতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে থাকুন।

 

 

 

 

Leave a Reply