মুজিব জন্মশতবর্ষ্ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্ত্রী
মুজিব জন্মশতবর্ষ্ (১৭ মার্চ্ ২০২০- ৩১ মার্চ্ ২০২২)
৬ জুলাই, ২০১৮ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উৎযাপনের২০২০-২১ সালকে মুজিববর্ষ্ ঘোষণা করেন। মুজিব বর্ষের লোগোর ডিজাইনার সাব্যসাচী হাজরা। মুজিব বর্ষ্ের থিম সং-
তুমি বাংলার ধ্রুবতারা, তুমি হৃদয়ের বাতিঘর
আকাশে-বাতাশে বজ্রকণ্ঠ, তোমার কণ্ঠস্বর-
এর গীতিকার ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরি এবং সুরকার ও সংগীত পরিচালক নাকিব খান। থিম সং এর কণ্ঠশিল্পী শেখ রেহানাসহ ২০ জন। বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপনে সিদ্ধান্ত নেয় ইউনেস্কো। ২০১৯ সালের নভেম্বরে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ৪০তম সাধারণ অধিবেশন এই মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। “গান্ধি শান্তি পুরষ্কার ২০২০” এ ভূষিত হন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ্ উপলক্ষে ঘটনাপঞ্জি-
……………………………………২০২০ খ্রি……………
১০ জানুয়ারি মুজিব বর্ষের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের
১৭ মার্চ্ ডাক বিভাগ বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত স্মারক সিলমোহর প্রকাশ করে।
২৯ মে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসে শান্তিরক্ষীদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরুপ একসেট স্মারক ডাকটিকিট
(বঙ্গবন্ধু এবং মুজিববর্ষের প্রতিকৃতি সম্বলিত) অবমুক্ত করে জাতিসংঘ।
১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ্ ইনস্টিটিউট ফর পিচ অ্যান্ড লিবার্টি ইনস্টিটিউটে যাত্রা শুরু হয়। এর
পরিচালক অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম।
২৭ আগস্ট নাইজেরিয়ার ডাকবিভাগ একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করে।
১১ ডিসেম্বর ইউনেস্কোর ২১০তম কার্যনির্বাহি বোর্ডের সভঅয় ‘ইউনেস্কো
-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল
প্রাইজ ইন দ্যা ফিল্ড অব ক্রিয়েটিভ ইকোনমি (সৃষ্টিশীল
অর্থনীতি) প্রবর্তনের সিন্ধান্ত গৃহীত হয়।
১৭ ডিসেম্বর মরিশাসের রাজধানী পোর্ট লুইস-এ একটি সড়কের নামকরণ
করা হয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্ট্রিট’।
২২ ডিসেম্বর হালদা নদীকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন
জারি করা হয়।
৩১ ডিসেম্বর বরগুনায় বাংলাদেশের প্রথম নৌকা জাদুঘর ‘বঙ্গবন্ধু নৌকা
জাদুঘর’ উদ্বোধন করা হয়।
……………………………………২০২১ খ্রি……………
১৪ মার্চ্ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে mujib
100.gov.bd ওযেবসাইটের একটি মোবাইল সংস্করণ
‘মুজিব১০০’ অ্যাপ এর উদ্বোধন করা হয়।
১৬ মার্চ্ বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামের ১২ লাখ ৯২ হাজার
বর্গফুট আয়তনবিশিষ্ট ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি’ সম্প্রতি
গিনেচ বুক অব ওয়ার্ড রেকর্ডসে সর্ববৃহৎ শস্যচিত্র ক্যাটাগরিতে
স্থান করে নেয়। ১২০ বিঘা জমির বিশাল ক্যানভাস ‘শস্যচিত্রে
বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি’ ফুটে তুলতে চীনথেকে আনা ডিপ ভায়োলেট
রঙের হাইব্রিড (এফ-১) ও দেশের ডিপ গ্রিন ধানের হাইব্রিড
চারা রোপন করা হয়।
৩০ মার্চ্ বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে ‘বঙ্গবন্ধুর সর্ববৃহৎ লোগো মানব
প্রদর্শনী’ অনুষ্ঠিত হয়।
২১ জুন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় নেত্রকনা সদর উপজেলার দক্ষিনে
বিশিউরা ও শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার হালইসার গ্রামকে
‘মৎস্য ড়্রাম’ ঘোষণা করে।
২৭ জুলাই বঙ্গবন্ধুর স্মরণে তুরস্কের ডাকবিভাগ কতৃক প্রকাশিত ছবিসহ
একটি ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
২০ সেপ্টেম্বর- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সদর দপ্তরের বাগানে
একটি ‘হানি লোকাস্ট’ গাছের চারা রোপন করেন। একই সময়ে
সেখানে তিনি বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে তার বাণীসংবলিত একটি
বেঞ্চও উন্মুক্ত করেন।
১১ নভেম্বর প্রথম ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার পায়
উগান্ডার ‘এমওটিআইভি ক্রিয়েশনস লিমিটেড’।
২ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জে ‘মুজিব১০০ পার্ক’ এর উদ্বোধণ করা হয়।
…………………………….২০২২……………..
১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মশতবার্ষিকী
পালিত হয়।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ও ম্যুরাল
সারাদেশে বঙ্গবন্ধু মেখ মুজিবুর রহমানের মোট ভাস্কর্য ও মুর্যাল আছে ১২২০টি। এর মধ্যে নিমার্ণ করা হযেছে ১২০১ টি ও নির্মানাধীন রয়েছে ১৯টি। বঙ্গবন্ধুর সর্ববৃহৎ ভাস্কর্য ‘বজ্রকণ্ঠ’ চট্টগ্রামের হালিশহরে অবস্থিত। এর উচ্চতা সাড়ে ২২ ফুট, বেদিসহ পুরো ভাস্কর্যের উচ্চতা ২৬ ফুট। দেশের সবচেয়ে বড় বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল (৫৮ ফুট উচ্চতার) নির্মান করা হয় রাজশাহীতে। ১৩ ডিসেম্বর,২০২১ তুরস্কের রাজধানী আস্কারায় বঙ্গবন্দু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্য ও তার নামের একটি পার্ক উদ্বোধণ করা হয়। অসমাপ্ত আত্বজীবনি এবং কারাগারের রোজনামচা বই দুটির আদলে মুজিব দর্শন শীর্ষক ম্যুরাল নির্মান করা হয় সিরাজগঞ্জে যমুনার পাড়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ‘দ্য স্ট্যাচু অব পিস অ্যান্ড ফ্রিডম’ (উচ্চতা : ১২৩ ফুট) ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে অবস্থিত। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের ইউনিয়ন পরিষধসমূহে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন, ইউনিয়নের গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নামফলক ও বাংলাদেশের ইতিহাস সম্বলিত বিলবোর্ড স্থাপনে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকদের প্রতি নির্দেশনা দেয়। ১৩ মার্চ, ২০২২ মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া এলাকায় পদ্মা সেতু তীঁরে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনি ও কারাগারের রোজনামচার ওপর নির্মিত দেশের প্রথম ভাস্কর্য উদ্বোধণ করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক গ্রন্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
◊ অসমাপ্ত আত্মজীবনী: বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থ।
ইংরেজী,উর্দু,জাপানী,চীনা,আরবী,ফরাসী,হিন্দি,তুর্কি,নেপালি,স্পেনিয়,অসমীয়,রুশ,ইতালিয়,মালয়,কোরিয়ান,মারাঠি(অপূর্ন আত্মকথা),গ্রিক,থাইএবং সর্বশেষ ককবরক (বাংলাদেশের অন্যতম ক্ষুদ্র জাতিসত্তা মাতৃভাষা) ভাষায় অনূদিত হয়।ককবরক ভাষায় গ্রন্থটির নাম ‚পাইথাকয়া লাংমা“। ‚অসমাপ্ত আত্মজীবনী“ গ্রন্থটি অনুবাদ করেন জাপানি ভাষায় কাজুহিরো ওয়াতানাবো,ইতালিয় ভাষায় আন্না কেক্কিয়ারেল্লা,কোরিয়ান ভাষায় লি ডং হিউন,মারাঠি ভাষায় অপর্না ভেলনকার,গ্রিক ভাষায় দিমিত্রি ভ্যাসিলিয়াটিস,থাই ভাষায় ড. জিরায়ুথ সিনথুফান (অনুবাদক দলের প্রধান) এবং ককবরক ভাষায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থি ও মৌলবীবাজারের বাসিন্দা যুবরাজ দেববর্মা। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্দোগে দৃষ্টিপ্রতিবদ্ধিদের জন্যে ছয় খণ্ডে ‚অসমাপ্ত আত্মজীবনীর“র ব্রেইল সংস্করণ প্রকাশ করা হয়। অসমাপ্ত আত্মজীবনী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে এবং চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের পাঠ্যসূচিতে ইংরেজী অনুবাদ ‰The Unfinshed Memoirs‘ অন্তবুক্ত করা হয়।
◊ কারাগারে রোজনামচা (Prison Diaries): এ প্রর্যন্ত ৪টি ভাষায় অনূদিত হয়। সর্বশেষ ফরাসি ভাষায় ‰জার্নাল ডি প্রেজন“(১৪ জুন ২০২১)। অনুবাদক- অধ্যাপক ফিলিপে বেনোয়।
◊ TheHistoric 7th march speech of Bangabandhu sheikh Mujibur Rahman: A World Documentary Heritage: ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন কতৃক প্রকাশিত জাতিসংঘের ৬টি দাপ্তরিক ভাষায় ফ্রেঞ্জ, স্পানিশ, আরবী, রুম, চীনা) বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বিষয়ক গ্রন্থ। মোরক উন্মোচন করা হয় ০৫ই মার্চ ২০২১।
◊ সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ব্রাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান :২য় খন্ড (০১ই ফ্রেব্রুয়ারি,২০১৯)
◊ Bangabandhu: The People`s Hero (২০২০ খ্রি.): পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত।
◊ এপারের চোখে মুজিব (২০২০ খ্রি.) প্রকাশ করে কলকাতার প্রকাশনা সংন্থা ‛কন্ঠস্বর’ সম্পাদক সুমন ভট্রাচার্য।
◊ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান: জনক আমার নেতা আমার (২০২১ খ্রি.) বঙ্গবন্ধু,তার পরিবারও সমসাময়ীক ঘটনাবলির ওপর শেখ হাসিনার লেখাগুলোর সংকলন। গ্রন্থটির সম্পাদনা করেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
◊ জয় বাংলা (সাক্ষাৎকার ১৯৭০-৭৫) শেখ মুজিবুর রহমান (২০২১ খ্রি.): গ্রন্থটির সম্পাদনা করেন নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং পিয়াস মজিদ। শেখ হাসিনা ভূমিকায় লেখেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কে নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান তার দেওয়া সাক্ষাৎকার ও আলাপচারিতা।
◊ ‛প্রিয় বঙ্গবন্ধু'(২০২১খ্রি.): শেখ ফজলে শামস পরশ সম্পাদিত ও প্রকাশিত বাংলাদেশ আওয়ামি যুবলীগের চিঠি সংকলিত বিষয়ক গ্রন্থ।
◊ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জ্ঞানকোষ ‛মুজিব পিডিয়া‘:প্রধান সম্পাদক কবি ও গবেষক কামাল চৌধুরী।
◊ রাষ্টনায়ক (২০২২ খ্রি.): বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশ পূর্ণগঠন পর্ব নিয়ে উদিসা ইসলামের লেখা বই।
◊ ‛কলকাতায় শেখ মুজিব’ (২০২২ খ্রি.): কলকাতা বই মেলায় মোড়ক উন্মোচন করা হয়। গ্রন্থটির লেখক সৌগত চট্রোপাধ্যয় ৯ কলকাতা)।
◊ বঙ্গবন্ধু স্মরণে বরণে (২০২২খ্রি.) গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন।সম্পাদক-হাসান রহমান।
◊ ‛বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান: ফিলোসোফী, পলিটিকস অ্যান্ড পলিসিস’ (২০২২ খ্রি.): লেখক- অধ্যাপক রহমান সোবহান ও অধ্যাপক রওনক জাহান।
◊ স্মারকগ্রন্থ ‛আমি তোমাদেরই লোক’ প্রকাশ করা হয় ১২ সেপ্টেম্বর,২০২২।
আরো তথ্য জানতে TimetoEdu এর সাথেই থাকুন।