আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় হলো বাংলা সাজেশন পদ্য অংশ।
কবিতা অংশ
সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুসারে কবিতার নাম, কবি ও ছন্দ:
কবিতার নাম | কবির নাম | ছন্দ |
ঐকতান | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | অক্ষরবৃত্ত |
সাম্যবাদী | কাজী নজরুল ইসলাম | মাত্রাবৃত্ত |
তাহারেই পড়ে মনে | সুফিয়া কামাল | অক্ষরবৃত্ত |
সেই অস্ত্র | আহসান হাবীব | অক্ষরবৃত্ত |
ফেব্রুয়ারী ১৯৬৯ | শামসুর রহমান | গদ্যছন্দ |
কবিতা সম্পর্কিত প্রাথমিক ধারণা
কবিতা-১ ঐকতান
- প্রথম লাইন – বিপুলা এ পৃথীবির কতটুকু জানি।
- শেষ লাইন – কাছে থেকে দুরে যারা তাহাদের বাণী যেন শুনি।
- উৎস: ‘ঐকতান’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জন্মদিনে’ কাব্যগ্রন্থের ১০ সংখ্যক কবিতা। কবির মৃত্যুর মাত্র চার মাস আগে ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের পহেলা বৈশাখ ‘জন্মদিনে’ কাব্যগ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয়।
- ছন্দ: কবিতাটি সমিল প্রবহমান অক্ষরবৃত্ত ছন্দে রচিত। কবিতাটিতে ৮+৬ এবং ৮+১০ মাত্রার পর্বই অধিক।
কবিতা – ০২ সাম্যবাদী
- প্রথম লাইন – গাহি সাম্যের গান-
- শেষ লাইন – এ হৃদয়ের চেয়ে বড়ো কোনো মন্দির-কাবা নাই।
- উৎস: আব্দুল কাদির সম্পাদিত বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ‘নজরুল রচনাবলি’র প্রথম খন্ড থেকে ‘সাম্যবাদী’ কবিতাটি সংকলন করা হয়েছে। কবিতাটির ১৯২৫ খিষ্টাব্দে প্রকাশিত ‘সাম্যবাদী’ কাব্যে অন্তর্ভুক্ত হয়।
- ছন্দ: কবিতাটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত।
কবিতা -০৩ তাহারেই পড়ে মনে
- প্রথম লাইন – “হে কবি, নিরব কেন ফাগুন যে এসেছে ধরায়,
- শেষ লাইন – রিক্ত হস্তে! তাহারেই পড়ে মনে, ভুলিতে পারি না কোন মতে।”
- উৎস: ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি ১৯৩৫ খিষ্টাব্দে ‘মাসিক মোহাম্মাদি’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়।
- ছন্দ: কবিতাটি অক্ষরবৃত্ত ছন্দে রচিত। প্রথম পর্ব আট মাত্রার, দ্বিতীয় পর্ব দশ মাত্রার।
কবিতা – ০৪ সেই অস্ত্র
- প্রথম লাইন- আমাকে সেই অস্ত্র ফিরিয়ে দাও।
- শেষ লাইন- পৃথিবীতে ব্যাপ্ত করো।
উৎস: ‘সেই অস্ত্র’ কবিতাটি অহসান হাবীবের ‘বিদীর্ণ দর্পণে মুখ’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে। এ কবিতায় কবির একমাত্র প্রত্যাশা-ভালোবাসার নামের মহান অস্ত্রকে পূনরায় এ মানবসমাজে ফিরে পাওয়া। কবির কাছে ভালোবাসা কেবল কোন আবেগ কিংবা অণূভুতির দ্যোতানা জাগায় না। তাঁর বিশ্বাস, এটি মানুষকে সকল অমঙ্গল থেকে পরিত্রাণের পথ বাতলে দেয়। তাই কবি বিশ্বের মানবকুলের কাছেই এ ভালোবাসা ফিরিয়ে দেবার অনুরোধ করেছেন।
- ছন্দ: কবিতাটি অন্ত্যমিলহীন অক্ষরবৃত্ত ছন্দে রচিত। এর পর্ব্গুলোর বিন্যাসও অসম।
কবিতা – ০৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯
- প্রথম লাইন- আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে।
- শেষ লাইন- শিহরিত ক্ষণে আনন্দের রৌদ্রে আর দুঃখের ছায়ায়।
উৎস: ‘ফেব্রুয়ারী ১৯৬৯’ শীর্ষ্ক কবিতাটি কবি শামসুল রাহমানের ‘নিজ বাসভূমে’ কাব্যগ্রন্থ থেকে চয়ন করা হয়েছে। ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ সংগ্রামী চেতনার কবিতা, দেশপ্রেমের কবিতা, গণজাগরনের কবিতা। ১৯৬৯ সালেপাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে যে গণআন্দোলনের সূচনা হয়েছিল, কবিতাটি সেই গণআন্দোলনের পটভুমিতে রচিত। কবিতাটি একুশের রক্তঝরা দিনগুলোতে দ্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে এদেশের সংগ্রামী মানুষের আত্মাহুতির মাহাত্ম্যে প্রগাঢ়রতা লাভ করেছে।
- ছন্দ: কবিতাটিতে গদ্যছন্দ ও প্রবহমানতা বিদ্যামান।
কবিতা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ্য্ তথ্য
ঐকতান (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
এক কথায় প্রশ্নোত্তর
১। রবীন্দ্রনাথ কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?- ১৮৬১ খিষ্টাব্দে।
২। কৃত্রিম পণ্যে ব্যর্থ্ হয়?- গানের পসরা।
৩। ‘ঐকতান’ কবিতায় বর্ণিত চাষি খেতে কী চালায়?- হাল।
৪। ‘ঐকতান’ কবিতাটি কবির কিসের স্বীকারোক্তি?- অপূর্ণ্তার।
৫। ‘ঐকতান’ কবিতায় কবির সর্বত্রপ্রবেশ বাধা হয়ে আছে ?- জীবনযাত্রা।
৬। ‘ঐকতান’ কবিতাটি কী ধরনের?- আত্মসমালোচনামূলক কবিতা।
৭। নতশির স্তব্ধ যারা তারা কার সম্মূখে?- বিশ্বের।
৮। কবি নিজেকে কী বলে দাবি করেছেন?- পৃথিবীর কবি।
৯। কবির অন্তরে কীসের দীনতা বিদ্যামান?- জ্ঞানের।
১০। কবির সাহিত্য সাধনায় কী বাধাঁ হয়ে দাড়িয়েছে?- জীবনযাত্রা।
১১। ‘শেষের কবিতা’ উপন্যাস হলে ‘শেষ লেখা’ কী?- কাব্যগ্রন্থ।
১২। ‘একতান’ কবিতায় কবি কাকে আহব্বান করেছেন?- অনাগত কবিকে।
১৩। কবি কিসের সংকীর্ণ্ বাতায়নে বসেছেন?- সমাজের উচ্চ মঞ্চের।
১৪। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত খ্রিষ্টাব্দে মারা যান?- ১৯৪১ সালে।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১। ‘প্রকৃতির ঐকতানস্রোত’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘প্রকৃতির ঐকতানস্রোত’ বলতে বিশ্বব্যাপী প্রকৃতির বিচিত্র আনন্দের মাঝে কবিদের ভাবনার ঐক্যকে বোঝানো হয়েছে।
‘ঐকতান’ কবিতায় বর্ণিত কবির মাঝে বিচিত্র চিন্তা-চেতনার প্রকাশ ঘটেছে। প্রকৃতির নানা উপাদান নিয়ে পৃথিবীর নানা প্রান্তের কবিগণ সাহিত্য রচনা করেন। তাঁদের সবার মাঝেই এক ধরনের মিল লক্ষ করা যায়। ‘ঐকতান’ কবিতায় বর্ণিত কবিঅনান্য কবির সাথে নিজের যোগ খুঁজে পান। ‘প্রকৃতির ঐকতান’ স্রোত বলতেসাহিত্যাঙ্গনে কবিদের মাঝে বিদ্যামান এ ঐক্যকেই বোঝানো হয়েছে। কবি এ ঐকতানস্রোতে ব্রাত্যজনের কবিদেরও উপস্থিতি কামনা করেছেন।
২। কবির মতে, গানের পসরা ব্যর্থ্ হয় কেন?
উত্তর: ‘ঐকতান’ কবিতায় সাহিত্যসৃষ্টিকে কৃত্তিম বলে অভিহিত করা হয়েছে। কবির মতে, যে গান অর্থ্ৎ সাহিত্য জীবনের সাথে জীবনের সংযোগ সাধন করতে পারে না তা প্রকৃত সাহিত্য নয়। এমন ধরনের কৃত্রিমতার দোষে দুস্ট সাহিত্য লক্ষ্যভ্রস্ট হয়। আর কৃত্রিমতার জন্য গানের পসরা ব্যর্থ্ হয় বলে কবি উল্লেক করেছেন।
সাম্যবাদী (কাজী নজরুল ইসলাম)
এক কথায় প্রশ্নোত্তর
১। কিসের চেয়ে বড় কোন মন্দির কাবা নাই? – হৃদয়ের।
২। কবির মতে কোথায় তাজা ফুল ফোটে? – পথে।
৩। কবির ভাষ্য অনুযায়ী সকল দেবতার বিশ্বমন্দির কোথায়?- অন্তরে।
৪। কবি কাদের খোদার মিতা বলে আখ্যা দিয়েছেন? – নবিদের ।
৫। কবি কোন ধর্মের ওপর জোর দেন? – অন্তর ধর্ম্।
৬। নজরুলের কবিতায় বর্নিত ‘শাক্যমুনি’ কে? – গৌতম বুদ্ধা।
৭। কনফুসিয়াস কে? – চীনা দার্শ্ নিক।
৮। ‘সাম্যবাদি’ কবিতায় সাম্যের ভিত্তি কী? – মানবতন্ত্র।
৯। ‘জেন্দাবেস্তা’ হলো? – পারস্যের ধর্মগ্রন্থ ও এর ভাষা।
১০। পৃথিবীতে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের মুলচেতনা কোনটি? – মানবকল্যান।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১। কবি কাজী নজরুল ইসলামের সাম্যবাদী ভাবনার পরিচয় দাও।
উত্তর: ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় কবি বৈষম্যবিহীন অসাম্প্রদায়িক পৃথিবী প্রতিষ্টার লক্ষ্যে বিশ্বের সকল মানুষের সম-অধিকার প্রত্যাশ্যা করেছেন। কবি এ সাম্যের গান গেয়েই গোটা মানব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে আগ্রহী।
মানবতাবাদী কবি কাজী নজরুল ইসলাম মানুষের মাঝে ভেদ-বৈষম্য প্রত্যক্ষ করে ব্যাথিত হয়েছেন। তিনি লক্ষ্য করেছেন, সমাজে মানুষ জাতি ধর্ম্-শ্রেণীর নিরীখে নান ভাগ-উপভোগে বিভক্ত। এ বৈষম্য ও ভেদ-বৈষম্য প্রত্যক্ষ করে ব্যাথিত হয়েছেন। বস্তুত অন্তধর্মকে উপেক্ষা করে বলেই মানুষ জাতি-ধর্মের দোহাই দিয়ে অন্যের প্রতি ভেদভাব পোষণ করে। আর তাই বৈষম্যর বিপরীতে মানুষ হিসেবে সম্মান প্রতিষ্ঠা এবং অসাম্প্রদায়িক মহৎ জীবনের প্রত্যাশায় কবি সাম্যের গান গেয়েছেন।
তাহারেই পড়ে মনে (সুফিয়া কামাল)
এক কথায় প্রশ্নোত্তর
১। কবি সুফিয়া কামালের জন্ম?- ১৯১১ সালে, বরিশালে।
২।সুফিয়া কামালের পৈত্রিক নিবাস কোথায়?- কুমিল্লায়।
৩। ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি কী ধর্মী?- কথোপকোথন ধর্মী ।
৪। ধারায় ফাগুন এসেছে কেন?- বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার জন্য ।
৫। ‘একাত্তরের ডায়েরী’ কার রচনা?- সুফিয়া কামাল।
৬। ‘সাঝেঁর মায়া’ কার লেখা?- বেগম সুফিয়া কামাল।
৭। কবিমন কীসে আসন্ন হয়ে আসে?- রিক্ততার হাহাকারে।
৮। কবি সুফিয়া কামালের ভাষায় ফাগুন কোথায় এসেছে?- ধরায়।
৯। কুহেলি উত্তরী তলে কে চলে গেছে?- মাঘের সন্ন্যাসী।
১০। সুফিয়া কামাল কত সালে মারা যান?- ১৯৯৯ সালে।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১। সুফিয়া কামাল ‘জননী’ সম্ভাষণে ভূষিত হয়েছেন কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: সুফিয়া কামাল সাহিত্যসাধনার পাশাপাশি নারী আন্দোলনে ব্রতী হয়ে ‘জননী’ সম্ভাষণে ভুষিত হয়েছেন।
নান প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে নিজে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন । স্বশিক্ষিত হয়ে বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনায় আত্মনিয়োগ করেছেন তিনি। পরবর্তীকালে সাহিত্যসাধনার পাশঅপাশি তিনি নারী আন্দোলনেও ব্রতী হয়েছিলেন। এ কারণে তিনি ‘জননী’ সম্ভাষণে ভূষিত হয়েছেন।
ব্যাখ্যা লিখন
১। ‘উপেক্ষায় ঋতুরাজে কেন কবি দাও তুমি ব্যাখ্যা?’
উত্তর: আলোচ্য অংমটুকু সুফিয়া কামাল রচিত ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতা থেকে সংগৃহীত হয়েছে।
প্রসঙ্গ: উক্তিটির মাধ্যমে কবিভক্ত কবির কাছে ঋতুরাজ বসন্তকে উপেক্ষা করে ব্যাখ্যা করার কারণ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।
বিশ্লেষণ:
সাধঅরণত কবিদের প্রিয় ঋতু বসন্ত কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্তের আগমনেও কবিভক্ত লক্ষ্য করেছেন যে তার প্রিয় কবি বসন্ত-বন্দনা করে কবিতা লিখছেন না। এ কারণে ব্যথিত ও হতাশ কবিভক্ত কবিকে বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে এর কারণউদঘাটন করার চেষ্টা করেছেন। উর্প্যুক্ত উক্তিটি দ্বারা ঋতুরাজ বসন্তকে উপেক্ষা করার কারণ কী-তা জানতে কৌতুহলী কবিভক্ত কবিকে প্রশ্নটি করেছেন।
সেই অস্ত্র (আহসান হাবীব)
এক কথায় প্রশ্নোত্তর
১। আহসান হাবীব কত সালে জন্মগ্রহণ করেন? – ১৯১৭ সালে।
২। কবি আহসান হাবীব আমৃত্যু কোন পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন? – দৈনিক বাংলা।
৩। ‘সভ্যতার সেই প্রতিশ্রুতি’বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? – ভালোবাসা।
৪। ‘সেই অস্ত্র’ কবিতায় কোন যায়গার নাম উল্লেখ আছে? – ট্রয়নগরী।
৫। সেই অস্ত্র কিসের লোভকে নিশ্চিহ্ন করে? – আধিপত্য ।
৬। যুদ্ধের নির্ম্মতার চিরায়ত শহর কোনটি? – ট্রয়নগরী।
৭। ‘সেই অস্ত্র’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গ্ত্য ? – বিদীর্ণ্ দর্পণে মুখ।
৮। ‘সেই অস্ত্র’ কবিতাটি কোন ধরনের রচনা? – চিত্রধর্মী।
৯। ট্রয়নগরী কোনটির জন্য নন্দিত? – স্থাপত্যকলা।
১০। জাত্যভিমানকে বারবার কে পরাজিত করবে? – সেই অস্ত্র।
১১। আহসান হাবীব কত সালে মারা যান? – ১৯৮৫ সালের ১০ জুলাই।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১। ‘সেই অস্ত্র’ কবিতায় কবি কেনো অবিনাশী অস্ত্রের প্রত্যাশী?
উত্তর: ‘সেই অস্ত্র’ কবিতায় কবির একমাত্র প্রত্যাশা – ভালোবাসা নামক মহান অস্ত্রকে পুনরায় এ সমাজে ফিরিয়ে আনা।
কবির কাছে ভালোবাসা কেবল কোন আবেগ কিংবা অনুভূতির দ্যেতানা জাগায় না। তাঁর বিশ্বাস এটি মানুষকে সকল অমঙ্গল থেকে পরিত্রাণের পথ বাতলে দেয়। তাই কবি বিশ্বের মানবকুলের কাছে এ ভালোবাসা ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা বিদ্বেষের বিষবাস্প একমাত্র ভালোবাসা নামক অস্ত্রের মাধ্যমেই অপসারণ সম্ভব। তাই কবি মানবিকতার শুভবোধকে ফিরে পেতে অবিনাশী অস্ত্র অফুরান ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে চান এ পৃথিবীতে।
ব্যাখ্যা লিখন
১। বার বার বিধ্বস্ত হবে না ট্রয়নগরী।
উৎস: আলোচ্য অংশটুকু কবি আহসান হাবীবের ‘সেই অস্ত্র’ কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ: আলোচ্য অংশে মানুষের মানবিকতাহীন আচরণ ও জাত্যভিমানের ফলে বিভিন্ন সভ্যতার পতনকে তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্লেষণ:
প্রজন্মের পর প্রজন্ম, মানুষের নিরস্তর প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠে এক একটি সভ্যতা। কোন এক প্রজন্মের মানুষের নৃশংস হানাহানিতে এক নিমিষেই ধ্বংস হতে পারে হাজার বছরের পুরোনো সভ্যতা। প্রাচীন গ্রিসের স্থাপত্যকলার নন্দিত এক শহর ট্রয়। মানুষের হিংসা বিদ্বেশ-ঈর্ষা আর দম্ভের শিকার হয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে বারবার ধ্বংস হয়েছে এ নগরী। শুধু ট্রয় নয়, ধ্বংস হয়েছে পৃথীবির বহু সভ্যতা। যুদ্ধের নির্মমতার এক চিরায়ত দৃষ্টান্ত এ ট্রয়।
ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ (শামসুর রহমান)
এক কথায় প্রশ্নোত্তর
১। শামসুর রহমান কত সালে জন্মগ্রহণ করেন? – ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর।
২। কৃষ্ণচূড়া কোথায় ফুটেছে? – শহরের পথে।
৩। কবির কাছে কৃষ্ণচূড়া ফুলগুলো কী মনে হয়? – শহিদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ।
৪। আমাদের চেতনায় কোন রংয়ের বিস্তার? – একুশের কৃষ্ণচূড়ার বিপরীত রং।
৫। উনিশশো উনসত্তরে সালাম কী শূন্যে তুলে? – ফ্যাগ।
৬। ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় ‘কৃষ্ণচূড়া’ কীসের প্রতীক? – প্রেরণার।
৭। শহরের পথে থরে থরে আবর কী ফুটেছে? – কৃষ্ণচূড়া।
৮। সালামের চোখে আজ আলোকিত কোন শহর? – ঢাকা।
৯। ১১ দফা আন্দোলনের ঘোষক ছিল কারা? – ছাত্ররা।
১০। দারিদ্র্যপীড়িত চিরকালের বাংলা মুখ এখন আর কী নয়? – নির্বাক নয়।
১১। সালামের হাতথেকে অবিরত কী ঝরে পড়ে? – অবিনাশী বর্ণ্ মালা।
১২। কৃষ্ণচূড়ার রং কিসের প্রতীক হিসেবে ব্যাবহৃত হয়েছে? – একুশের চেতনার।
১৩। ১৯৬৯-এর আন্দোলনের কারণ কী? – জাতিগত শোষণ।
১৪।‘ফেব্রুয়ারী ১৯৬৯’ কবিতাটি কোন ধরনের কবিতা? – ইতিহাসনির্ভ্র।
১৫। কোন রং চোখে ভালো লাগে না? – যে রং সন্ত্রাস আনে।
১৬। ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কাদের রক্তের বুব্দুদ ওঠে? – শহিদদের।
১৭। দিনরাত্তি বহু লোক কোথায় ভুলুণ্ঠিত হচ্ছে? – ঘাতকের আস্তানায়।
১৮। ‘ফ্লাগ’ শব্দটি কোন ভাষার শব্দ? – ইংরেজি।
১৯। ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত? – গদ্যছন্দ।
২০। ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কিসের গন্ধে ভরপুর? – স্মৃতিগন্ধে।
২১। শামসুর রহমান কত সালে মারা যান? – ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১। ‘চতুর্দিকে মানবিক বাগান, কমলবন হচ্ছে তছনছ’।
উত্তর:
ভাষা আন্দোলনের চেতনাবিরোধী ঘাতক দল এখনো সারাদেশে অন্ধকারের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। এদের দৌরাত্ম্যে দেশের মানুষ কেউ মরা, কেউবা আধমরা অবস্থঅয় আছে। ফলে মানবিকতাও মৃত্যু ঘটেছে। মানুষের সুন্দর ও মহৎ চিন্তা-চেতনার বিকাশ দারুনভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কবিতায় পাকিস্তানি দ্বৈরশাসক কর্তৃক সাধঅরণ প্রতিবাদী মানুষের ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছিল এবং তার ফলশ্রুতিতে ফুলের বাগানের ন্যায় সাজানো গোসানো এক জাতি যেভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছিল সেই বিষয়টিকেই কবি মানবিক বাগান ও কমলবন তছনছ হওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
২। ‘সালামের চোখ আজ আলোচিত ঢাকা।’ কবিতায় ‘আজ আলোচিত ঢাকা’ বলতে কী বোঝঅনো হয়েছে?
উত্তর: ৫২ এর ভাষঅ আন্দোলনের চেতনাকে বুকে ধঅরণ করে ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৬৯ এ বাঙালিরা আবার রাজপথে নামে- সেই চিত্র বোঝাতে কবি আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।
মার্তৃভাষোর দাবিতে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে অংশ নেন বাংলার আপামর জনতা। আবারও একই চিত্রের পুনরাবৃত্তি ঘটে ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও বঞ্চণার বিরুদ্ধে ভাষাসৈনিকদের চেতনা ধারণ করে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তেথেকে অসংখ্য মানুষ এসে ঢাকার রাজপথে নামে নায্যে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে। উল্লিখিত চরণটি দ্বারা সকল আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু ঢাকার অবস্থঅকে বোঝানো হয়েছে।
ব্যাখ্যা লিখন
১। ‘দেখলাম সালামের হাত থেকে নক্ষত্রের মতো ঝরে অবিরত অবিনাশী বর্ণ্ মালা’।
উৎস: আলোচ্য অংশটুকু শঅমসুর রহমানের রচিত ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ: বাংলা বর্ণমালার মতো বাংলা মায়ের মুক্তির জন্য অসংখ্য সালামের রাজপথে নেমে আসার ঘটনাকে বোঝানো হয়েছে।
বিশ্লেষণ:
১৯৫২ তে মাতৃভাষার মান বাঁচাতে নেমে এসেছিল সালাম-বরকতের মতো অসংখ্য বিপ্লবী মানুষ। তেমনি বাংলা মায়ের মুক্তির জন্যও ভাষাসৈনিকদের চেতনা ধারণ করে আবার রাজপথে নেমেছিল অজস্র সালামেরা। ঘাতকের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল বাংলা মায়ের মুক্তির চেতনায়। প্রতিবাদের স্বারক হিসেবে ছিল শ্লোগান, প্রেকার্ড, ফেস্টুন। দেশের জন্য তাঁদের আত্মহুতির সঙ্গে এগুলোও ঝরে পড়েছিল বাংলার রাজপথে।
আরো তথ্য জানতে TimetoEdu এর সাথেই থাকুন।