ফ্রিল্যান্সিং কী??
ফ্রিল্যান্সিং এর মানে হলো একটি কাজ বা প্রকল্প নিজে নিজে করা, যেখানে কোন প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সরকারী বা নিজস্ব কোন পদক্ষেপ নেওয়া না হয়। এটি মূলত একটি স্বায়ত্তশাসিত বা নিজস্ব ব্যবসার সমান এবং কোন নির্দিষ্ট অফিসে বসে কাজ করার প্রয়োজন নেই।
একজন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে আপনি আপনার কাজকে স্বাধীনতা পরিপূর্ণভাবে করতে পারেন এবং আপনার নিজস্ব সময়সূচী অনুযায়ী কাজ করতে পারেন। একজন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কাজের সময়, কর্মস্থল এবং কাজের ধরন নির্দিষ্ট না থাকলেও সে তার নিজস্ব সময়সূচী এবং কাজ ধরণ অনুযায়ী কাজ করতে পারেন।
কোন কোন বিষয়ের উপরে ফ্রিল্যান্সিং করা যায়?
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে প্রায় যেকোন ধরনের কাজ করা যায়। কিন্তু কয়েকটি জনপ্রিয় ক্যাটাগরি হলো:
1. লেখালেখি এবং সম্পাদনা: ব্লগ পোস্ট, আর্টিকেল, সংবাদ প্রতিবেদন, উইকিপিডিয়া নিবন্ধ, বই লেখার জন্য লেখালেখি এবং সম্পাদনা করা হয়।
2. ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট: ওয়েবসাইট ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব হোস্টিং, ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এবং ওয়েব সার্ভিস প্রদান করা হয়।
3. সামাজিক মাধ্যম মার্কেটিং: সামাজিক মাধ্যম প্রচার, সামাজিক মাধ্যম পোস্টিং এবং প্রচারণা, ট্রেন্ডিং টপিকগুলো অনুসরণ করা এবং সামাজিক মাধ্যম প্রচারের মাধ্যমে ব্র্যান্ড প্রচার করা হয়।
4. গ্রাফিক্স ডিজাইন: লোগো ডিজাইন, ব্রণ্ডিং ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, এনিমেশন এবং বিজ্ঞাপন ডিজাইন করা হয়।
এছাড়াও আরো অনেক বিষয়ের উপরে ফ্রিল্যান্সিংক করা যায়।
কেন ফ্রিল্যান্সিং করবো?
ফ্রিল্যান্সিং করা হলো কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত হওয়া না এবং স্বনির্ভর হওয়া। আপনি নিজের পছন্দের কাজ করতে পারবেন এবং সময়সুবিধার সাথে একটি ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং করার কিছু উপকারিতা নিম্নলিখিত হলো:
1. স্বাধীনতা: ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি নিজের কাজের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন এবং নিজের স্বচ্ছলতা প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
2. সময় সংকট নেই: ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি নিজের সময়সুবিধার উপর কাজ করতে পারেন। আপনি কেবল তখন কাজ করবেন যখন আপনার সময় থাকবে।
3. অধিক আয়: ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি প্রতিদিন অধিক কাজ করে আরো আয় করতে পারেন এবং নতুন ক্লায়েন্ট পাওয়ার সুযোগ থাকে।
4. সুবিধাজনক: ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি হাজারো কাজ সম্পাদন করতে পারেন এবং একই সময়ে আরো একটি ব্যবসা করতে পারেন।
কোন বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখলে ভালো হয়??
ফ্রিল্যান্সিং একটি বিশাল ক্ষেত্র এবং তার সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জনে একটি সময় লাগতে পারে। তবে কিছু বিষয় হলো যেগুলো ফ্রিল্যান্সিং শিখলে তোমার কাজ করতে সহায়তা করতে পারে।
১. একটি স্পেশালাইজড স্কিল শিখো: একটি বিশেষজ্ঞ স্কিল শিখলে তুমি একটি নিশ্চিত সম্পদ পেতে পারো যেটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে চাহিদা থাকে। উদাহরণস্বরূপ, যদি তুমি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখে থাকো তবে তোমার জন্য প্রথম কাজ খুঁজতে সমস্যা হবে না।
২. মার্কেটিং শিখো: তোমার জন্য একটি বিশেষ পদক্ষেপ হলো তোমার দক্ষতা প্রকাশ করা। একটি উন্নয়নশীল প্রফাইল লেখার সাথে সাথে তুমি তোমার দক্ষতা প্রদর্শন করতে হবে কিংবা তুমি কীভাবে কাস্টমার প্রাপ্ত করবে তার জন্য সুপারিশ করতে হবে।
৩. লিড জেনারেশন : লিড জেনারেশন একটি মার্কেটিং প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায় নতুন গ্রাহক পাবে। এটি ব্যবসায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো নতুন বা পুরাতন গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে সহায়তা করা।
৪. এসইও: এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হলো ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেজ র্যাঙ্কিং বা পজিশন উন্নয়নের একটি প্রক্রিয়া। এটি মূলত ওয়েবসাইটের একটি পেজ এবং সাইটের কন্টেন্ট সঠিকভাবে অনুসন্ধান ইঞ্জিন দ্বারা বুঝে নেওয়া এবং অনুসন্ধান ইঞ্জিন দ্বারা র্যাঙ্ক করা এবং গ্রাহকদের জন্য উপযুক্ত করা হয়।
এসইও এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট এবং পেজ এর জন্য উপযুক্ত কিওয়ার্ড এবং কন্টেন্ট তৈরি করা হয়। সেই কিওয়ার্ড ও কন্টেন্টটি সার্চ ইঞ্জিন কে জানানো হয় যেন গ্রাহকরা ওয়েবসাইটে সহজে পাবে এবং এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট ট্রাফিক বাড়ানো যায়।
৫. কন্টেন্ট রাইটার: কন্টেন্ট রাইটার হলো এমন একজন লেখক যা ওয়েবসাইট, ব্লগ, সংবাদপত্র বা অন্য কোন মাধ্যমের জন্য বিভিন্ন ধরনের লেখা তৈরি করে থাকেন। সাধারণত এই লেখা ওয়েবসাইট বা অন্য মাধ্যমে প্রকাশিত হয় যাতে মানুষ সেগুলো পড়ে আবেদন করতে পারে এবং বিভিন্ন প্রকারের তথ্য জানতে পারে।
একজন কন্টেন্ট রাইটার হতে হলে তিনি খুব ভালো লেখক হতে হবেন এবং উন্নয়নশীল মনেবিন হতে হবেন। এছাড়াও তারা আবশ্যকভাবে সম্পর্কযুক্ত বিষয়ে জ্ঞানী হতে হবে যাতে তারা আপনাদের অন্যান্য কর্মীদের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারে।
৬. গ্রাফিক্স ডিজাইন: গ্রাফিক্স ডিজাইন হলো এমন একটি পেশা যেখানে ছবি, লোগো, প্যাকেজিং, বিজনেস কার্ড এবং অন্যান্য প্রকারের ব্র্যান্ডিং ম্যাটেরিয়াল তৈরি করা হয়। এই পেশার লোকরা কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহার করে তৈরি করা হয় যাতে সে ব্র্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করতে পারে এবং উন্নয়নশীল হতে পারে।
গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কিছু উদাহরণ হলো নিম্নলিখিতঃ
১। লোগো ডিজাইন
২। ইউআই ডিজাইন (UI design)
৩। প্যাকেজ ডিজাইন
৪। এনিমেশন ডিজাইন
৫। স্ট্যাশনারি ডিজাইন
৬। পোস্টার ডিজাইন
৭। বুককভার ডিজাইন
৮। বিজনেস কার্ড ডিজাইন
গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে হলে কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহার করা শেখানো হয় এবং ডিজাইন নিয়ে কোর্স পাঠানো হয়।
৯. ওয়েবসাইট ডিজাইন: ওয়েবসাইট ডিজাইন হলো এমন একটি পেশা যেখানে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়। একটি ভালো ওয়েবসাইট ডিজাইন সামগ্রিকভাবে দেখতে আকর্ষণীয় হওয়া উচিত এবং ব্যবহারকারীদের সহজলভ্য থাকা উচিত।
ওয়েবসাইট ডিজাইন শিখার জন্য নিম্নলিখিত টপিকগুলো শিখতে হবেঃ
১. ওয়েবসাইট ডিজাইনের মূলভূত অংশগুলো যেমন লেআউট, কালার, টাইপোগ্রাফি ইত্যাদি।
২. ওয়েবসাইট ডিজাইনে ব্যবহৃত হওয়া টুল এবং সফটওয়্যারের ব্যবহার।
৩. HTML এবং CSS ভাষার ব্যবহার ও জাভাস্ক্রিপ্ট শিখতে হবে।
৪. ওয়েবসাইটের প্রোটোটাইপ তৈরি করা এবং টেস্টিং করা।
৫. ওয়েবসাইট ডিজাইনে ব্যবহৃত হওয়া গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পর্কিত কিছু টপিক যেমন ফটোশপ এবং আইকন ডিজাইন ইত্যাদি।
৬. ওয়েবসাইট এক্সপেরিয়েন্স এবং ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইনের জন্য উপযুক্ত টপিক শিখতে হবে।
এছাড়াও ওয়েবসাইট ডিজাইন শিখার জন্য অনলাইন কোর্স, টিউটোরিয়াল, প্রোজেক্ট এবং কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করা উচিৎ।
তবে আপনি চাইলে আরো কিছু বিষয় নিয়ে জেনে বুঝে তারপরে আপনার লক্ষ্য নির্ধারন করতে পারেন।
একবার হলে আপনি CITNBD এর সম্পর্কে জানতে পারেন। এখান থেকেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স গ্রহণ করতে পারেন।