You are currently viewing মাছ চাষ ও মাছ চাষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা!
মাছ চাষ ও মাছ চাষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা!

মাছ চাষ ও মাছ চাষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা!

মাছ চাষ মাছ চাষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা!

 

মাস হচ্ছে প্রাণিজ আমিষ এর মূল উৎস। এবং ভিটামিনের মূল উৎস। মাছ চাষ করে যেমন কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাচ্ছে ঠিক কেমন ভাবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে। পুকুর নদী-নালা খাল বিল বিভিন্ন ডোবায় মাছ চাষ করা হয়। মাস একটি লাভজনক ব্যবসা। মাছ চাষ ও মাছ চাষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে পরে পর্যাপ্ত পরিমাণ লাভ করা যায়। কোন নির্দিষ্ট জলাশয়ের পরিকল্পিত উপায় এ মাছ চাষ করলে লাভবান হওয়া যায়। পরিকল্পিত উপায়ে মাছ চাষ করে নিজস্ব বাজার ছাড়া দূরবর্তী বাজারে মাছ বিক্রি করে লাভবান হওয়া যায় তাছাড়া এই মাছ বিদেশের রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। মাছ চাষের অভিজ্ঞতা এবং তার পরিশ্রমের উপর নির্ভর করে তার মাছ চাষে লাভের ব্যাপারটা। যদি একজন মাছ চাষে প্রয়োজন মত ব্যবস্থা না গ্রহণ করে তাহলে সে নামাজ চাষে কোন দিন লাভবান হতে পারবে না। মাছ চাষের ক্ষেত্রে আমাদের বাংলাদেশ চতুর্থতম তাই মাছ চাষের কোন বিকল্প নেই। আসুন বিস্তারিতভাবে জেনে নিই মাছ চাষ ও মাছ চাষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে।

 

১. পুকুর নির্বাচন!

২.পুকুর খনন ও প্রাথমিক কাজ!

৩.সতর্কতার সাহায্যে পোনা যত্ন ও মজুদ!

৪.মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে জাত নির্বাচন!

৫.মাছের প্রাথমিক খাবার নির্বাচন!

৬.মাছের লিটার নির্বাচন এবং নিরাপদ ব্যবহার!

৭.নিয়মিত ওজন দেওয়া এবং স্বাস্থ্য সেবা ও বিক্রি!

 

মাছ চাষের ক্ষেত্রে আপনাকে উপরোক্ত বিষয়গুলো সব বিস্তারিতভাবে নিয়ে আলোচনা করা হবে। আপনি যদি পুকুর নির্বাচন পুকুর খনন প্রাথমিক কাজ সতর্কতা সাহায্য প্রণাম নির্বাচন মাসের লিটার নির্বাচন নিয়মিত ওজন দেওয়া সম্পর্কে না জানেন তাহলে আপনি কোনদিনই মাছ চাষ করে লাভবান হতে পারবেন না। তাই মাছ চাষ করার ক্ষেত্রে আপনাকে উপলব্ধ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া প্রয়োজন। আসুন উপরোক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা যাক।

 

পুকুর নির্বাচন!

 

মাছ চাষের ক্ষেত্রে যে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় এবং প্রথম বিষয় সেটি হচ্ছে পুকুর নির্বাচন। আপনি যদি ভেবে থাকেন মাছ চাষের ব্যবসা করবেন তাহলে আপনার জন্য পুকুর নির্বাচন করাটা হবে সবথেকে প্রথম বিষয়। আপনি যদি একটি ভালো উপকূল নির্বাচন না করতে পারেন তাহলে কোনদিনই মাছ চাষে লাভবান হতে পারবেন না। পুকুর নির্বাচনের জন্য আপনাকে অবশ্যই রোদ উজ্জ্বল এবং খোলামেলা বাড়ির আশেপাশের জায়গা নির্বাচন করতে হবে। বাড়ির আশেপাশে জায়গাগুলো বলার কারণ হচ্ছে আপনাকে অবশ্যই মাছ চাষের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়ই করতে হবে। সাধারণত দোয়াশ এবং এটেল মাটি,এটেল দোআঁশ মাটি হল মাছ চাষের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাটি। সাধারণত এই সকল মাটিতে মাছ খুব ভালো হয়। মাছ চাষের জন্য অবশ্যই পুকুরের আয়তন ১০ শতাংশ হতে হবে। ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ আয়তন মাছ এর জন্য একটি আদর্শ পুকুরের উদাহরণ। পুকুরের গভীরতা অবশ্যই 4 থেকে ৫ মিটার রাখতে হবে । পুকুরের পাড়ে কোন সময়ই পাতা ঝরা গাছ এবং ঝোপঝা রাখা যাবে না এতে মাছের অনেক ক্ষতি হয়। উপরোক্ত বিষয়গুলো মানলে আপনি একটি আদর্শ পুকুর নির্বাচন করতে পারবেন।

 

2। পুকুর খনন ও সাধারণ কাজ !

 

উপনির্বাচনের পরে যে বিষয়টি আছে সেটি হচ্ছে পুকুর খনন। এবং পুকুরে সাধারণ বিভিন্ন কাজ। যেখানে পুকুর খানা হবে অবশ্যই সেখানে পুকুরের পাড় বন্যার পরিস্থিতি পানি উঠানামা বর্ষা কালের ব্যবস্থা সব কিছুর দিকে বিবেচনা করতে হবে। পুকুর খননের জন্য আপনাকে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ পুকুর নির্বাচনকারীর পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। পুকুর খননের পর আপনাকে অবশ্যই পুকুরে বিভিন্ন ধরনের গাছ হেলেঙ্গা কচুরিপানা কলমি লতা বিভিন্ন ধরনের গাছ শিকড় সহ তুলে ফেলতে হবে। বিভিন্ন ধরনের রাক্ষসী এবং কাট মাস থাকলে তা তুলে ফেলতে হবে। কারণ একটি আবাদী পুকুরে কখনো এ ধরনের মাছ থাকতে পারে না। প্রতি শতাংশে এক কেজি হাড়ে চুন আপনাকে দামে গুলে পুকুরে পানিতে এবং আশেপাশে দিতে  হবে। মাটি ও পানির গুনাগুন বিবেচনায় রেখে আপনাকে কিছুদিন পর মাটিতে বিভিন্ন ধরনের জৈব সার বিশেষ করে পচা গোবর সার দিতে হবে। আর পুকুর যদি শুকনা হয় তাহলে আপনি চুন এবং গোবর সার দিয়ে তারপর লাঙ্গল দিয়ে শুদ্ধ পানি প্রবেশ করাতে পারেন। পোনা মজুদের আগে পুকুরে বিভিন্ন ধরনের খোলা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পোকামাকড় থাকলে তা বিষ দিয়ে মেরে ফেলতে হবে। উপরোক্ত বিষয়গুলো করলে পুকুরের সাধারণ বিষয়গুলো হয়ে যায়।

 

৩. পুকুরে সতর্কতার সাথে কোন যত্ন ও মজুদ

 

নিয়মিতভাবে পুকুরে পোনা ছাড়তে হবে এবং মনে রাখতে হবে কোন পলিসিন ব্যাগে এবং বালতিতে আনা হলে তা অবশ্যই ২০ মিনিট পুকুরের পানিতে রাখতে হবে। কুকুরের এবং পলিথিন ব্যাগের তাপমাত্রা যদি সমান সমান হয় তখন তাহলে পুকুরে মাছ ছাড়ার উপযোগী। পোনা মাছ পুকুরে থাকা অবস্থায় আপনাকে দুইবেলা প্রতিদিন সকালে এবং বিকেল তিনটার দিকে খৈল জাতীয় বিভিন্ন ধরনের খাবার দিতে হবে। একটা বিষয় আপনাকে মনে রাখতে হবে মাছ চাষের জন্য বিভিন্ন ধরনের হ্যাচারি যে ধরনের পোনা সরবরাহ করে সেগুলো সরাসরি মাছ চাষের জন্য অথবা পুকুরে ছাড়া জন্য রেডি থাকে না তাই আপনাকে অবশ্যই এই বিষয়টি মেনে পুকুরে পোনা ছাড়তে হবে। অনেক মাছ চাষে আছে যারা এই বিষয়টি না জেনে সরাসরি পুকুরে পোনা ছেড়ে দেয় এবং বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য আপনাকে পুকুরের পোনাকে বিশেষভাবে নার্সিং করতে হবে। নার্সিং করার পরে যদি কিছুদিন পর ও না বড় হয় তাহলে নিয়মিতভাবে পোনা গণনার মাধ্যমে আপনাকে আলাদা খাদ্য প্ল্যানিং করতে হবে। জাল টেনে এবং মাছ তারার মাধ্যমে আপনাকে মাসের ব্যায়াম করাতে হবে এতে মাছের বৃদ্ধি খুব দ্রুত হয়।

 

৪। মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে মাছের জাত নির্বাচন!

 

আপনি যদি পুকুরে মিশ্র মাছ চাষ করতে চান তাহলে আপনি মিশ্র চাষের জন্য বিভিন্ন ধরনের জাত নির্বাচন করতে জানতে হবে। আপনি বিভিন্ন ধরনের রাক্ষসী মাছের সাথে কোনদিনও অন্য ধরনের মাছ চাষ করতে পারবেন না। তাই আপনাকে অবশ্যই মিশ্র চাষের জন্য জাত নির্বাচন করা জানতে হবে। সাধারণত একটি পুকুরে তিনটি স্তর থাকে। বিভিন্ন ধরনের চাষিরা স্তর গুলো ভিত্তি করে মাছ ছাড়তে না জেনে এক স্তরে বেশি মাছ ছেড়ে দেয় এবং মাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ লাভবান হতে পারে না। তাছাড়া একই স্তরের বিভিন্ন ধরনের মাছ ছাড়ার কারণে তাদের বিভিন্নভাবে প্রতিযোগিতা করতে হয় তাই মাছের বৃদ্ধি হয় না। উপরের স্তরের জন্য বিভিন্ন ধরনের মাছ যেমন সিলভার, কাতলা ,সর্বপুটি, ছোট পুটি এসব মাছ ছাড়া যায়। মধ্য স্তরের জন্য রুই তেলাপিয়া টেংরা এই মাছগুলো ছাড়া যায়। এবং নিম্ন স্তরের জন্য যেগুলো খাড়া হয় সেগুলো হচ্ছে মৃগিল, স্কারপিও ,কালা বাউস। একই সাথে যদি আবার মৃগেল এবং গলদা চিংড়ি ছাড়া হয় তাহলে গলদা চিংড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মাছ চাষের ক্ষেত্রে অবশ্যই মাংস ভোজি অর্থাৎ একে অন্যকে খেয়ে ফেলে এ ধরনের মাছ ছাড়া যাবেনা। আশা করি মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়েছেন।

 

  1. মাছের প্রাথমিক খাবার নির্বাচন!

 

মাছ চাষ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই মাছের খাবার নির্বাচন করতে জানতে হবে। যদি আপনি মাছ চাষে খাবার নির্বাচন করতে না পারেন তাহলে কোনদিনই মাছ চাষে লাভবান হতে পারবেন না। লাভজনক এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে মাছ চাষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হল মাছ চাষে প্রাথমিক খাবার নির্বাচন। প্রায় 70 ভাগ লাভের বিষয়টি মাছ চাষে প্রাথমিক খাবার নির্বাচনের ওপর নির্ধারণ করে। মাছ চাষের জন্য আপনি বাজারে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য কিনতে পারেন অথবা নিজে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সরবরাহ করতে পারেন। মাছের সঠিক খাবার নির্বাচন এবং বয়স এবং অনুপাত ভেদে খাবার নির্বাচন না করলে মাছ চাষে কোন দিন লাভবান হওয়া যায় না। অনেকে নিয়মিতভাবে একই খাবার নির্বাচন করতে করতে মাঝে মাঝে অন্য খাবার দিয়ে ফেলে এতে মা সেরা বিভ্রান্তিতে পড়ে এবং সেই খাবার না খেয়ে মাছের বৃদ্ধি হয় না এটি ব্যবসা ক্ষেত্রে কোনোমতেই ব্যবহারযোগ্য নয়। অনেক মাছ চাষী আছে যারা শুধু সার প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ বৃদ্ধি করতে চান। এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ আপনাকে স্যার ব্যবহার করতে হবে কিন্তু সময় এবং পরিমাণ অনুযায়ী। অতিরিক্ত সার ব্যবহারের ক্ষেত্রে মাছের বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়। তাই মাছ চাষের জন্য সঠিক খাবার নির্বাচন এবং সারের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই এগুলো মেনে চলার নিয়ম করবেন।

 

6। মাছের লিটার নির্বাচন ও নিরাপদ ব্যবহার।

 

মাছ চাষের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে লিটার নির্বাচন ও নিরাপদ ব্যবহার। আপনি যদি মাছ চাষে লিটন নির্বাচন না করতে পারেন এবং মাছ চাষে নিরাপদ ব্যবহার না করতে পারেন তাহলে আপনি কোনদিনই মাছ চাষে লাভবান হতে পারবেন না। মা চাষে পোল্ট্রি লিটার বিভিন্ন ধরনের কাঠের গোড়া এবং তিল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অনেক মাছ চাষী সাধারণত খাবার হিসাবে এগুলো দিয়ে থাকে। কিন্তু মাছ চাষের জন্য একটি সবথেকে ভয়াবহ একটি ব্যবস্থা। এই পোল্ট লিটার গুলো মাছ খেলে মাছের বিভিন্ন ধরনের রোগ হয় এবং হজম করতে পারেনা তাই মাছের বৃদ্ধি ঘটে না। সামান্য পরিমাণ লাভের আশায় এগুলো ব্যবহার করলে অধিক পরিমাণে ক্ষতি হতে পারে এবং পেটের সমস্যার কারণে মাছ অনেক মারা যেতে পারে। তাই মাছ চাষের ক্ষেত্রে প্রতি লিটার অথবা মাছের লিটার নিরাপদ ব্যবহার করা খুবই জরুরী।

 

7। নিয়মিত ওজন দেওয়া স্বাস্থ্যসেবা ও বিক্রি !

 

মাছ চাষের সর্বশেষ কয়েকটি বিষয় হচ্ছে নিয়মিত ওজন দেওয়া স্বাস্থ্যসেবা করা এবং মাছ বিক্রি করা। নিয়মিত ভাবে পুকুরে জাল টেনে মাছের ওজন দিতে হবে এবং দেখতে হবে পরিমাণ অনুযায়ী মাছ বৃদ্ধি পাচ্ছে কিনা। যদি পরিমাণ অনুযায়ী মাছ বৃদ্ধি পায় তাহলে বুঝবেন আপনার মাছের সবকিছু ঠিক আছে এবং যেমন সেবা করছেন ঠিক তেমনি করা প্রয়োজন। যদি বুঝতে পারেন আপনার মাসে ওজন কম আছে তাহলে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। মাছ বিক্রির সময় আপনাকে অবশ্যই সাইজ অনুযায়ী মাছ বিক্রি করতে হবে বড় সাইজের মাছগুলো বিক্রি করে ছোট সাইজের মাছগুলো পুকুরে রাখতে হবে। পরবর্তীতে ছোট সাইজের মাছগুলো বৃদ্ধি পেলে আপনাকে সেগুলো বিক্রি করতে হবে।

 

আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে মাছ চাষ ও মাছ চাষে প্রয়োজনের ব্যবস্থার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বুঝতে পেরেছেন। এমন আরো বিভিন্ন ধরনের যেমন টেক রিলেটেড লেখাপড়া রিলেটেড এবং বিজনেস আইডিয়া সম্পর্কে পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। এতক্ষণ পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

 

আরো তথ্য জানতে TimetoEdu এর সাথেই থাকুন।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments